মোঃ আব্দুল হাই খান
                  
বাংলার বুকে জন্মেছিলে তুমি বাঙ্গালী জাতির জনক
হেরিতে তোমারে ফিরে নাকো আঁখি, পড়িতে চাহেনা পলক।
আশার প্রদীপ হাতে নিয়া
পরাধীন দেশটা স্বাধীন করিয়া,
যতটুক জানি, টানিয়া দুঃখের ঘানি, স্বাধীনতা করেছো জয়
ভাল ছিলে তুমি, ভালোবাসি তোমায়, ছিলনা তোমার ভয়
জয় পিতা, তোমার জয়।


সৃষ্টির সেরা, শ্রেষ্ঠ তুমি, বাঙ্গালী জাতির জনক
হারিয়ে তোমায় ফিরিলো যে হুস, নড়লো জাতির টনক।
নাহি তৃপ্তি, নাহি যেন সুখ
তোমাকে হারিয়ে পেয়েছি দুঃখ।
তুমি যে মহান, বাঙ্গালীর প্রাণ, নেইকো তোমার ভয়
পরাধীনতার কাঁটা ভেঙ্গে তুমি ছিনিয়ে আনিলে জয়।
জয় বাংলা, বাংলার জয়।


শত সহস্র বাধা ডিঙ্গিয়ে স্বাধীনতা তুমি আনিলে ছিনিয়ে
তব শান্তি নেই, শান্তি লভে তুমি জীবন বিলিয়ে।
এ কোন্ অকৃতজ্ঞ হায়
ধরেছে বুকে বাংলা মায়,
শত বাধা ঠেলে আনিলো যিনি দেশের স্বাধীনতা
তবু মোরা কেন অকৃতজ্ঞের মত, ভুলেছি তাহার কথা?
তিনি যে মহান পিতা।


ভালোবাসতেন তিনি, ভালোবাসা ছিল, মনে ছিল কত সাধ
অকৃতজ্ঞ যত ভুলে তার কথা, বাধাইয়া দিল বাঁধ।
তুমি বলেছিলে, বাংলার বুকে
দুঃখ রবেনাকো, সবাই রবে সুখে,
তবে কেন আজ বাংলার বুকে, হইতেছে অত্যাচার?
ওগো মহান পিতা, হইবে নাকি এর প্রতিকার?
তুমি যে মহান সত্যিকার।


কার পালে পড়ে, কিবা ভুল করে, হারিযে গেলে পঁচাত্তরে
আর কভু তুমি, ফিরে আসবে নাকো, এই বাংলার পরে।
দেখ চেয়ে দেখ তোমারি সন্তান
ভুলিয়া তোমারে করিছে অপমান।
চারিদিকে দেখ, বোমা বাজি আর চলিছে গোলাগুলি
অকারণে দেখ ভাই হয়ে ভাইয়ের উড়ায় মাথার খুলি
আউড়িয়ে মিষ্টি বুলি।


স্বার্থের মোহে তোমার ছেলেরা হয়েছে স্বার্থপর
পরকে তারা আপন ভাবিয়া আপনকে করেছে পর।
ঘুষ ছাড়া দেখ মিলেনা চাকুরী
স্বাধীন বাংলায়, লজ্জায় মরি!
এমন শিক্ষা দাওনিতো পিতা, তুমি যে জাতির জনক
আজ তুমি নেই, হারিয়েছি তোমায়, নামলো দারুণ শোক,
কনক তুমি, বাংলার জনক।


তোমার শিক্ষা ভুলে গিয়ে মোরা, হয়েছি নর পিশাচ
ভাইকে মেরে নিজে বড় হই, তবুও মনের মিটেনা আশ।
হায়রে বিধির বিধান
মানুষ হনন করে মানুষের প্রাণ,
এ কোন্ রীতি এতো শুভ নয়, এযে মহা ভুল
দেখ চেয়ে দেখ তোমার ছেলেরা হারায় কেমনে কুল।
ভুল পিতা, জাতির ভুল।


দাও বলে দাও তোমার ছেলেদের, বাঙ্গালী জাতির তরে
সময় থাকিতে সাবধান হোক, নইলে ঠকিবে পরে।
একোন্ চক্রে জাতি পড়িয়াছে আজ
নিজের ক্ষতি নিজেই করে, কি দারুণ লাজ!
কত অনাচার সয়েছিলে তুমি, ছিল কত অবদান
তোমার ছেলেরা সেকথা ভুলিয়া, করিছে তোমারে অপমান।
পিতা, তুমি যে মহান।


সত্য কভু থাকে নাকো চেপে, অসত্য যতই বাড়ুক
চলে গেছো তুমি, হারালাম তোমায়, হারিয়েছি দারুণ সুখ।
রক্ত দিয়ে ছেলেদের তুমি
করে গেলে চির ঋণী
তব কেন তোমার অবুঝ ছেলেরা স্বার্থের মোহে অন্ধ
বড় দুঃখ হয়, জাতির জনক তোমায়, বলে তারা মন্দ।
পিতা, জাতি আজ অন্ধ।


রাজনীতি নয়, করে পেটনীতি, এ বড়  লজ্জার কথা
ওগো মহান পিতা, আসবে না কি শান্তি হেথা?
স্বার্থের মোহে ডুবে আছে তারা
ক্ষমতার লোভে তাই হয় দিশেহারা,
তোমার ছেলেরা রায় দিয়ে যাদের করিল দেশের নেতা
সেখানে তারা করিছে ঝগড়া, পেয়েছে যেন বাপের ভিটা
পিতা, এ বড় লজ্জার কথা!


সংসদতো নয়, ঝগড়াখানা স্পীকার যেন সকলের  নানা
নাতি-নাতিনীর ঝগড়া দেখে, মনের দুঃখে চক্ষু মুদে, সাজেন কানা
রাস্তাঘাট আর সংসদ ভবন
সর্বক্ষেত্রে জ্বলছে আগুন।
এটা বড়ই দুঃখ জনক, কারণ, তুমি জাতির জনক
তুমি বিনে পনরই আগষ্ট, জাতির নিকট দারুশ শোক।
বাঙ্গালী জাতির শোক।


তোমার আদর্শ থাকতো যদি বাঙ্গালী জাতির তরে
পথে ঘাটে কেহ দিতনা প্রাণ, ভাইয়ের রোষানলে পড়ে
বলে দাও পিতা তোমার ছেলেদের
করিতে নিজের বিচার।
নিজের ভুল ভুলিয়া তারা করিছে নিজের সুনাম
এ সাহস তারা পেল কোথায়? করিছে তোমার দূর্ণাম
পিতা, নেই কি তোমার দাম?


চির ঋণী মোরা, চিরঞ্জীব তুমি, তুমি যে মহান
যতদিন দেহে থাকিবে প্রাণ, গাইবো তোমার গান
মোরা ভুলি নাই, পারিনা ভুলিতে
কিঞ্চিৎ মগজ, থাকিতে খুলিতে।
স্বাধীনতা তুমি ছিনিয়ে এনেছো, করনি মৃত্যুর ভয়
স্বাধীন দেশের মুক্ত মাটিতে, মিষ্টি কোকিল গায়-
জয় বাংলা, বাংলার জয়
বাঙ্গালী জাতির জয়
বঙ্গবন্ধুর জয়।
---- সমাপ্ত ----


  রচনাকালঃ ১৫/০৮/১৯৯৬ ইং।